পৃথিবীর প্রথম ত্রিভুজাকৃতির ডাকটিকিট
উত্তমাশার দূর্লভ ডাকটিকিট
স্কুলের ভূগোলে পড়েছিলাম উত্তমাশা অন্তরীপ নামটা – মনে পড়ে?
এটি দক্ষিণ আফ্রিকার আটলান্টিক উপকূলে অবস্থিত কেপ পেনিনসুয়ালার একটি অন্তরীপ। ভারত ও দূরপ্রাচ্যে যাওয়ার নতুন আবিষ্কৃত সমুদ্রপথটি ইউরোপীয়দের মনে বিপুল আশার সঞ্চার করেছিল, যার প্রতিফলন ঘটেছে অন্তরীপটির নামকরণে। পর্তুগীজ অভিযাত্রী বার্থোলোমিউ ডিয়াজ (Bartolomeu Dias) ১৪৮৮ সালে প্রথম কেপ এলাকায় পৌঁছেন এবং অন্তরীপটির নাম দেন ‘কেপ অব স্টর্মস’। পরবর্তী সময় পর্তুগালের দ্বিতীয় জন নামটি পরিবর্তন করে কেপ অব গুড হোপ বা উত্তমাশা অন্তরীপ নামকরণ করেন।
এই সমূদ্রপথ দিয়ে যাতায়াত করা জাহাজের নাবিকরা এখানেই ইউরোপ থেকে বয়ে আনা চিঠিগুলো রেখে যেত আর ইউরোপের জন্য চিঠিগুলো নিয়ে যেত। ১৬৫২ সালে ডাচ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এখানে একটা সাপ্লাই ক্যাম্প গড়ে তোলে। পরবর্তীতে এর নাম হয় কেপ টাউন। ১৭৯৫ সালে ব্রিটিশরা এটি দখল করে আর ১৮১৪ সালে এটিকে একটি ব্রিটিশ কলোনী হিসাবে ঘোষণা করে। ১৯১০ সালের ৩১শে মে কেপ অব গুড হোপ ইউনিয়ন অব সাউথ আফ্রিকার কেপ প্রভিন্স হিসাবে অন্তর্ভুক্ত হয়।
১৮৫৩ সালের পহেলা সেপ্টেম্বর তারিখে এই কলোনীতে প্রথম দুইটি ডাকটিকিট প্রকাশ করা হয়। ডাকটিকিটের মাঝখানে ‘লেডি হোপ’ একটা পাথরের উপরে বসে আছে আর তার পাশে একটা নোঙ্গর। একপাশে লেখা পোস্টেজ, একপাশে মূল্যমান আর নিচে লেখা কলোনীর নাম।
ডাকটিকিট দুইটির একটি ছিল এক পেনি মূল্যের লালচে বাদামী রঙের আর অন্যটি চার পেন্স মূল্যের নীল রঙের ডাকটিকিট। প্রথম ডাকটিকিটটি ছিল সংবাদপত্রের জন্য আর দ্বিতীয়টি চিঠি পাঠানোর জন্য।
দুইটি কারনে এই ডাকটিকিট দুইটি অনন্য। প্রথমত, এগুলিই হচ্ছে পৃথিবীর প্রথম ত্রিভুজাকৃতির ডাকটিকিট আর দ্বিতীয়ত, কোনও ব্রিটিশ কলোনী থেকে রাণী ভিক্টোরিয়ার ছবি ছাড়া অন্য ছবি দিয়ে ডাকটিকিট প্রকাশের ঘটনাও বিরল।
Written by: Akhlaqur Rahman