December 22, 2024
ভৌগলিক ডাকটিকিট

পৃথিবীর শেষ প্রান্ত টিয়েরা ডেল ফুয়েগো যাকে নিয়ে বিশ্ব এখন মাতোয়ারা

By – Akhlaqur Rahman

আক্ষরিক অর্থেই টিয়েরা ডেল ফুয়েগো (Tierra del Fuego) পৃথিবীর শেষ প্রান্ত। দক্ষিণ আমেরিকার সর্ব দক্ষিণ মূল ভূখণ্ডের পরে ম্যাগেলান প্রণালী (Magellan Straits) আর তারপরে টিয়েরা ডেল ফুয়েগো দ্বীপের অবস্থান। vকয়েক হাজার আদিবাসী ছাড়া এই দ্বীপে থাকার মধ্যে ছিল কিছু পাহাড়, বরফ আর হিমবাহ। মূল ভূখণ্ডের শেষ অংশের চিলি আর আর্জেন্টিনা, এই দুই দেশই এই দ্বীপের দাবিদার ছিল কিন্তু এই বিরান ভূমি নিয়ে দুই দেশেরই তেমন মাথাব্যথা ছিল না। ১৮৯০ সালে এই দ্বীপে স্বর্ণ পাওয়ার পর দুই দেশ সহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দলে দলে মানুষ টিয়েরা ডেল ফুয়েগোতে ছুটে আসতে থাকে। ঘরের বাহিরে থাকা মানুষজন যোগাযোগের জন্য একটা মাধ্যম খুঁজছিল কিন্তু এই ভিন্ন জগতে একটা ডাকঘরও ছিল না। এই সময় একজন রোমানিয়ান ভাগ্যান্বেষী জুলিয়াস পপার (Julius Popper) নিজের থেকে টিয়েরা ডেল ফুয়েগোতে একটা পোস্টাল সার্ভিস চালু করেন। তিনি ১৮৯১ সালে রুডল্ফ সৌকপ (Rudolph Soucop) এর নকশায় আর্জেন্টিনার বুয়েনস আয়ার্সের জুয়ান এইচ কিড এণ্ড কোম্পানী (Juan H. Kidd & Company) থেকে ১০ সেন্টাভোস (Centavos) মূল্যমানের লাল রঙের একটা ডাকটিকিট ছাপিয়ে আনেন।

10 centavo stamp of tierra del fuego
Tierra del Fuego 10 centavos
image – pinterest

ডাকটিকিটে তিনি লিখে দিয়েছিলেন যে এই ডাকটিকিট একটি স্থানীয় ডাকটিকিট (Local Stamp)। ডাকটিকিটের নকশায় খনির কাজে যে যন্ত্রপাতি লাগে সেই কোদাল আর গাইতী দিয়ে একটা ক্রশ তৈরী করে মাঝে একটা বৃত্ত এঁকে লেখা ছিল পপারের নামের আদ্যাক্ষর পি। নকশার এক কোনে একটা খামের ছবিও ছিল। পপার এই ডাকটিকিটের বিনিময়ে অশ্বারোহীর মাধ্যমে সমূদ্র পর্যন্ত এবং তারপর নৌকায় করে মূল ভূখণ্ডে চিঠি পৌঁছে দিতেন। তবে চিলি বা আর্জেন্টিনা কেউই এই ডাকটিকিটের মূল্য দিত না ফলে এর সাথে চিলি বা আর্জেন্টিনার ডাকটিকিটও লাগাতে হত। এই ডাকটিকিট যদি একটা আপনার হাতে এসে যায়, টাকার অংকে হয়তো তেমন কিছু পাবেন না তবে মনে রাখবেন যে একটা দেশের সম্পূর্ণ ডাকটিকিট সংগ্রহ আপনার হাতে চলে আসলো।

Let's share this post
error: