পানামা খাল খননে ডাকটিকিটের ভূমিকা
ডাকটিকিটের মজার কথা – ৬
By – Akhlaqur Rahman
পানামা খাল দিয়ে জাহাজ চলাচলের এক’শ বছর পার হয়ে গেছে। কিন্তু জানেন কি, একটা ডাকটিকিট ছাপা না হলে এই খাল পানামায় না হয়ে নিকারাগুয়ায় হত? ১৮৬৯ সালে সুয়েজ খাল খনন করার পর আটলান্টিক মহাসাগরের সাথে প্রশান্ত মহাসাগরকে যুক্ত করার জন্য একটি ফেঞ্চ কোম্পানী অনুরূপ একটা খাল খননের চিন্তা করে এবং ১৮৮১ সালে কলোম্বিয়ার সাথে চুক্তিও করে (তখন পানামা কলোম্বিয়ার অংশ ছিল) যদিও ১৮৮৯ সালে সেই কোম্পানী দেউলিয়া হয়ে যায়। ১৮৯৮ সালে একটি ইউএস কমিশন নিকারাগুয়া দিয়ে এই খাল খননের প্রস্তাব দেয় এবং ১৯০০ সালে হাউজ অফ রিপ্রেজেনটেটিভে ২২৫-৩৫ ভোটে এই প্রস্তাব গৃহীত হয়। ১৯০১ সালে রুজভেল্ট মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি চাইতেন যে মার্কিন নিয়ন্ত্রাধীন একটা খাল খনন করতে তবে নিকারাগুয়ায় নয় বরং পানামায়। সিনেটে ১৯০২ সালে এই খাল খননের বিল উত্থাপিত হয়। n vএর মাঝে ১৯০২ সালের ২৪শে মার্চ তারিখে নিকারাগুয়ার মাউন্ট মোমোটোম্বো (Mount Momotombo) তে অগ্নোৎপাত শুরু হয়। যদিও এই আগ্নেয়গিরি প্রস্তাবিত খাল থেকে প্রায় এক’শ মাইল দূরে অবস্থিত, এই সংবাদ যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করতে পারে মনে করে নিকারাগুয়ার রাষ্ট্রপতি যুক্তরাষ্ট্রে কেবলগ্রাম করেন যে এই সংবাদ আমেরিকানদের বোকা বানানোর জন্য একটা ফ্রেঞ্চ অপকৌশল, যার কোনো ভিত্তি নাই। এর সুযোগ নিলেন সেই ফ্রেঞ্চ কোম্পানির প্রধান ফিলিপ জিন বুনাউ ভারিল্লা (Philippe-Jean Bunau-Varilla) কারন কলোম্বিয়ার সাথে তার কোম্পানীর চুক্তি তখনও বলবৎ ছিল। তিনি নিউ ইয়র্ক আর ওয়াশিংটনের স্ট্যাম্প ডিলারদের কাছ থেকে ১৯০০ সালে মাউন্ট মোমোটোম্বোর উপর প্রকাশিত নিকারাগুয়ার আটটি ডাকটিকিটের যে ক’টি পেলেন তার সব কিনে নিলেন। এই ডাকটিকিটে দেখা যাচ্ছে যে পাহাড়ের উপর দিয়ে ধোঁয়া বাহির হচ্ছে। ১৯০২ সালের ১৬ই জুন তারিখে ভারিল্লা এই ডাকটিকিট সহ একটা করে চিঠি সকল সিনেট সদস্যদের পাঠালেন আর চিঠিতে লিখলেন, “An official witness of the volcanic activity on the Isthmus of Nicaragua.” তিনদিন পর ১৯শে জুন তারিখে মার্কিন সিনেট পানামায় খাল খননের বিল পাশ করে।